ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি? best solution 1

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি: ভিটামিন-ডি চর্বিতে দ্রবণীয় একটি সেকোস্টেরয়েড group যা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফেট এর আন্ত্রিক শোষণ এবং মানবদেহে বিভিন্ন জৈবিক প্রভাব সৃষ্টি করে। এটি চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন, যা ভিটামিন- ডি১, ডি২ ও ডি৩ এই তিন ভাগে বিভক্ত।

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি

আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কাজ করে থাকে। তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হলো শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এটি হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি ভিটামিন ডির আরও কিছু উপকারিতা আছে।


ভিটামিন ডি’র উপকারীতা নিন্মরূপঃ


১. হাড় ও দাঁতের গঠন উন্নত করে
ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। এই দুই উপাদান হাড় ও দাঁতের গঠন এবং শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং হাড়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের ভঙ্গুরতা) এবং রিকেটস (শিশুদের হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া) হতে পারে।
এর অভাবে দাঁত ভেঙ্গে যেতে পারে।


২. ভিটামিন ডি’র অভাবে ক্লান্তি ও অবসাদবোধ হয়।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও ভাইরাস থেকে রক্ষইটকরে। বিশেষ করে শীতকালে যখন সাধারণ ঠান্ডা, ফ্লু, কফের সংক্রমণ ভিটামিন ডি কমাতে সাহায্য করে।

৪. হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি
ভিটামিন ডি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যেতে পারে। পাশাপাশি এটি রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

৫. মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ভিটামিন ডি আমাদের মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ডিপ্রেশন (মানসিক অবসাদ) এবং বিভিন্ন মানসিক সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে মুড স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করতে পারে এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৬. ওজন কমাতে সহায়তা করে

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে। এটি শরীরের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে সহায়তা করে, যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি মেটাবলিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

৭. পেশীর গঠন উন্নত করে
ভিটামিন ডি মাসল ফাংশন বা পেশীর শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকলে পেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং শরীরের গতিবিধি কমে যেতে পারে। এছাড়া, এটি পেশী ক্ষতির ঝুঁকি কমায় এবং শরীরের মোট ক্ষমতা বাড়ায়।

৮. প্রেগনেন্সির সময় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা
গর্ভবতী মায়েদের জন্যও ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর হাড়ের গঠন ও বিকাশের জন্য অপরিহার্য, এবং মা ও শিশুর মধ্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া (প্রেগনেন্সির কারণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া) প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

৯. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি ক্যান্সারের কিছু ধরনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে কোলন, স্তন, এবং প্রস্রাবের রাস্তা সংক্রান্ত ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। এটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয়

ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার কি কি


ভিটামিন ডি শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে। এই ভিটামিনের অভাবে শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হলো:

১) হাড় দুর্বলতা ও ব্যথা: ভিটামিন ডির অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং প্রায়ই হাড়ের ব্যথা অনুভূত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে রিকেটস এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে অস্টিওম্যালাসিয়া (হাড়ের নরম হওয়া) দেখা দিতে পারে।

২) পেশীর দুর্বলতা: ভিটামিন ডি পেশীর শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে, এর অভাবে পেশী দুর্বল ও দুর্বলতা অনুভূত হয়।

৩) ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা: ভিটামিন ডি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, এর অভাবে সহজেই বিভিন্ন সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৪) হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি: দীর্ঘদিন ভিটামিন ডির অভাব থাকলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। ফলে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৫) ডিপ্রেশন ও মানসিক অবসাদ: ভিটামিন ডি মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। এর অভাবে ডিপ্রেশন বা অবসাদগ্রস্ততা অনুভূত হতে পারে।

৬) চুল পড়া: ভিটামিন ডির অভাবে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৭) বিরক্তি ও ক্লান্তি: ভিটামিন ডির অভাবের কারণে দেহে অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে।
ভিটামিন ডির অভাব শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই সময় থাকতেই প্রয়োজনীয় সূর্যালোক গ্রহণ এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা উচিত।

ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার কি কি:


ভিটামিন ডি-র প্রাকৃতিক প্রধান উৎস হলো সূর্যের আলো। সূর্যের আলো আমাদের শরীরের অনাবৃত অংশে পড়লে ত্বকের কোষ তা ফটোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ভিটামিন ডি-৩ তে পরিণত করে।
খাবারের মধ্যে অল্প কিছু খাবার আছে যেগুলোতে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
১) সামুদ্রিক মাছ ( স্যালমন, টুনা, ম্যাকেরেল প্রভিতি) ও মাছের লিভারের তেল।
২) গরু ও খাসির কলিজা
৩) ডিমের সাদা অংশ
৪) চিজ
৫) মাশরুম
৬) দুধ, সয়ামিল্ক, কাঠবাদামের দুধ
৭) ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট প্রভৃতি।

Source: National Institutes of Health.


কিছু শুকনো ফল আছে যা ভিটামিন ডি র উৎস হিসাবে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে।


ভিটামিন ডি যুক্ত ফলের নামঃ


১) শুকনা ডুমুরঃ শুকনো ডুমুর ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।

২) কাঠ বাদামঃ কাঠ বাদাম রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া উপকারী। এতে আছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই ইত্যাদি।

৩) আলুবোখারা

৪) খেজুর

৫) শুকনা অ্যাপ্রিকটস

আরও পড়ুনঃ ভিটামিন-সি এর অভাবে কি হয়?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top